টপিকঃ বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়
2.
প্রত্যেক ভাষারই তিনটি মৌলিক অংশ হলো-
প্রতিটি ভাষারই কতগুলো মৌলিক অংশ থাকে,তন্মধ্যে ধ্বনি, শব্দ,বাক্য অন্যতম। মানুষের কণ্ঠ নিঃসৃত বাক সংকেতের সংগঠনকে ধ্বনি বলে। আর ধ্বনিকে লিখে প্রকাশ করার জন্য যেসব সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়, তাকে বর্ণ বলে।আর দুই বা ততোধিক বর্ণ পাশাপাশি বসে মনের ভাব সম্পূর্ণ রূপে প্রকাশ করলে তাকে শব্দ বলে।আবার,দুই বা ততোধিক শব্দ পাশাপাশি বসে একটি সার্থক বাক্য গঠন করলে মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করলে,তাকে ভাষা বলে।
এইজন্য যে কোন ভাষার জন্য ধ্বনি, শব্দ,বাক্য গুরুত্বপূর্ণ।
3.
ক্রিয়ামূল, ক্রিয়ারকাল ও পুরুষ ইত্যাদি ব্যাকরণের কোন অংশের আলোচ্য বিষয়?
সব ভাষার ব্যাকরণেই প্রধানত নিম্নলিখিত চারটি বিষয়ের আলোচনা করা হয় –
১. ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology)
২. শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব (Morphology)
৩. বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax) এবং
৪. অর্থতত্ত্ব (Semantics)
এ ছাড়া অভিধানতত্ত্ব (Lexicography) ছন্দ ও অলংকার প্রভৃতিও ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়।
১. ধ্বনিতত্ত্ব ধ্বনি: মানুষের বাক প্রত্যঙ্গ অর্থাৎ কণ্ঠনালি, মুখবিবর, জিহ্বা, আল - জিহ্বা, কোমল তালু, শক্ত তালু, দাঁত, মাড়ি, চোয়াল, ঠোট ইত্যাদির সাহায্যে উচ্চারিত আওয়াজকে ‘ধ্বনি’ বলা হয়। বাক প্রত্যঙ্গজাত ধ্বনির সুক্ষ্মতম মৌলিক অংশ বা একককে (Unit) ধ্বনিমূল (Phoneme) বলা হয়। ধ্বনির উচ্চারণপ্রণালী, উচ্চারণের স্থান, বর্ণমালা, ধ্বনি, ধ্বনির প্রতীক বা বর্ণের বিন্যাস, সন্ধি, ধ্বনির পরিবর্তন ও লোপ, ণত্ব ও ষত্ব বিধান ইত্যাদি বাংলা ব্যাকরণে ধ্বনিতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়।
২. রূপতত্ত্বঃ এক বা একাধিক ধ্বনির অর্থবোধক সম্মিলনে শব্দ তৈরি হয়, শব্দের ক্ষুদ্রাংশকে বলা হয় রূপ (morpheme)। রূপ গঠন করে শব্দ। সেই জন্য শব্দতত্ত্বকে রূপতত্ত্ব (Morphology) বলা হয়। শব্দ, প্রত্যয়, পুরুষ, উপসর্গ, অনুসর্গ, কারক ও বিভক্তি, বচন, ক্রিয়ার কাল, ক্রিয়ামূল, দ্বিরুক্ত শব্দ, পদাশ্রিত নির্দেশক, সমাস, লিঙ্গ ইত্যাদি শব্দতত্ত্বে বা রূপতত্ত্বে আলোচনা করা হয়।
৩. বাক্যতত্ত্বঃ মানুষের বাক্প্রত্যঙ্গজাত ধ্বনি সমন্বয়ে গঠিত শব্দসহযোগে সৃষ্ট অর্থবোধক বাক প্রবাহের বিশেষ বিশেষ অংশকে বলা হয় বাক্য (Sentence)। বাক্যের সঠিক গঠনপ্রণালী, বাচ্য, উক্তি, বিভিন্ন উপাদানের সংযোজন ও বিয়োজন, এদের সার্থক ব্যবহারযোগ্যতা, বাক্যমধ্যে শব্দ বা পদের স্থান বা ক্ৰম, পদের রূপ পরিবর্তন ইত্যাদি বিষয় বাক্যতত্ত্বে আলোচিত হয়। বাক্যের মধ্যে কোন পদের পর কোন পদ বসে, কোন পদের স্থান কোথায় - বাক্যতত্ত্বে এসবের পূর্ণ বিশ্লেষণ থাকে। বাক্যতত্ত্বকে পদক্রমও বলা হয়।
৪. অর্থতত্ত্বঃ শব্দের অর্থবিচার, বাক্যের অর্থবিচার, অর্থের বিভিন্ন প্রকারভেদ, যেমন—মুখ্যার্থ, গৌণার্থ, বিপরীতার্থ ইত্যাদি অর্থতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়।
5.
'Phonology' এর বাংলা প্রতিশব্দ কী?
ব্যকরনের চারটি বিষয়
১. ধ্বনিতত্ব (Phonology)
২. শব্দতত্ব ( Morphology)
৩. বাক্যতত্ত্ব( syntax)
৪. অর্থতত্ত্ব ( semantics)
6.
সাধুরীতিতে কোন পদটির দীর্ঘরুপ হয় না?
- সংস্কৃত ভাষা থেকে উৎপন্ন ভাষাকে সাধু ভাষা হিসেবে অভিহিত করা হয়।
- সাধারণ মানুষের মুখের ভাষাকে চলিত ভাষা বলে।
- সাধু রীতিতে সর্বনাম ও ক্রিয়াপদ এক বিশেষ গঠন পদ্ধতি মেনে চলে।
- অপরদিকে, চলিত রীতিতে সর্বনাম ও ক্রিয়াপদ পরিবর্তিত ও সহজতর রূপ লাভ করে।
- তবে সাধু ও চলিত রীতিতে অব্যয় অভিন্নরূপে ব্যবহৃত হয়।
7.
'পদ প্রকরণ' ব্যাকরণের কোন অংশে আলোচিত হয়?
এক বা একাধিক ধ্বনির সম্মিলনে যে অর্থপূর্ণ ক্ষুদ্রতম একক গঠিত হয়, তাকে রূপমূল বলে।রূপতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়- শব্দ, শব্দের গঠন, বচন, লিঙ্গ, কারক, পুরুষ, উপসর্গ, প্রত্যয়, বিভক্তি, সমাস, ক্রিয়া,প্রকরণ ইত্যাদি।
8.
'ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব' বিধান ব্যাকরণের কোন অংশের আলোচ্য বিষয়?
• বাংলা ব্যাকরণের প্রধান ও মৌলিক আলোচ্য বিষয় চারটি । যথাঃ
ধ্বনিতত্ত্ব,
শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব,
বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম ও
অর্থতত্ত্ব ।
-ধ্বনিতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়- ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধান, সন্ধি, ধ্বনি, ধ্বনি পরিবর্তন ও লোপ প্রভৃতি ।
-শব্দতত্ত্ব বা রুপতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়- শব্দ, লিঙ্গ, বচন, সমাস, উপসর্গ, কারক, ধাতু, পদ প্রকরণ প্রভৃতি ।
-বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রমের আলোচ্য বিষয়- বাক্যের গঠন প্রণালী, বিরাম বা যতি চিহ্ন, বাগধারা প্রভৃতি ।
10.
রূপতত্ত্বের অপর নাম কি?
ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় চারটি।
১) ধ্বনিতত্ত্ব বা phonology
২) শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব বাmorphology
৩) বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম বা syntax
৪) অর্থতত্ত্ব বা semantics